আদালতের কাঠগড়ায় সাক্ষীকে হত্যার হুমকি

আদালতের কাঠগড়ায় সাক্ষীকে হত্যার হুমকি

আদালতের কাঠগড়ায় সাক্ষীকে হত্যার হুমকি
আদালতের কাঠগড়ায় সাক্ষীকে হত্যার হুমকি

অনলাইন ডেস্ক: কক্সবাজারে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ হত্যা মামলার দ্বিতীয় দিনের সাক্ষ্য চলাকালীন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এক সাক্ষীকে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন আসামি।

এমন ভয়ংকর দৃশ্য বিচারকের দৃষ্টিগোচর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হুমকিদাতা আসামিকে সতর্ক করে দেন।আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এ ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এবং রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটির পরিচালনাকারী আইনজীবী মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী বলেন, ‘খুনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নুরে আলম সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালত কক্ষে উপস্থিত হলে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামি খায়রুল আমিন তাকে (নুরে আলমকে) হাত উঁচিয়ে জবাই করে হত্যার হুমকি দেন।

অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আরো বলেন, ‘মামলার সকল আসামি মিয়ানমারের নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার সদস্য। তারাই রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

সাক্ষী নুরে আলম ছিলেন নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহর অফিসের পিয়ন। সেদিন তার সামনেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। যে আসামি খায়রুল আমিন হত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনিই সরাসরি গুলি করেছেন মর্মে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। এমনকি মামলার চারজন আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও তার নাম আছে। ’

আদালতে বিচার চলাকালীন উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার ৪০ বছরের আইন পেশায় বিচারকের সামনে এরকম ভয়ংকর ঘটনা আর দেখিনি। আদালতের এ ঘটনায় আইনজীবীরা শঙ্কায় আছেন। ’

গতকাল রবিরার মামলার বাদী নিহতের ভাই হাবিবুল্লাহর সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আগামীকাল বুধবার মামলার আরো সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল মান্নান জানান, মামলার সাক্ষ্য চলাকালীন নূরে আলম নামের একজন সাক্ষী বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসামির বিরুদ্ধে হত্যার হুমকির অভিযোগ করেন। এ সময় বিচারক আসামি খায়রুল আলমের নিকট জানতে চাইলে আসামি হত্যার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)-এর চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। আদালত শুনানি শেষে গত ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন।

বর্তমানে মুহিব উল্লাহর পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায়।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply